a
03:41 PM 26/11/2019
Rating : 10/10
test
test
'মহাজ্ঞানী আইনস্টাইন' বইটিতে কালজয়ী বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের জীবন, কর্ম, পরিবার ইত্যাদি তুলে ধরা হলো। লেখক পুরো বইটিকে দুটিমাত্র অধ্যায়ে বিভক্ত করেছেন।শেষোক্ত অধ্যায়টি আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। সে তুলনায় প্রথম অধ্যায়টি অত্যন্ত সরস ভাষায় সহজ লেখনীতে ফুটে ওঠেছে,যদিও বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উচ্চতর ব্যাখ্যা একরোখা লেগেছে।ক্ষেত্রবিশেষে,তা সংক্ষিপ্তভাবেও বলা যেত যেহেতু এটি আইনস্টাইনের একপ্রকার জীবনী বিষয়ক বই,তাঁর বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের রিভিউ বা বিশ্লেষণী বই নয়। তারপরো কিছু কিছু জায়গায় লেখক স্বতন্ত্র লেখনী প্রজ্ঞার বাহাদুরি দেখিয়েছেন।বিশেষ করে গল্প বলার ঢংয়ে বেশ নতুনত্ব ছিলো যা আইনস্টাইনের জীবনীবিষয়ক অন্য বইগুলোয় দেখা যায় না। প্রতিভাবান এ বিজ্ঞানী সম্পর্কে আমরা জানতে পারি তাঁর দেরিতে কথা বলতে শেখা। ছোটবোন মাজার জন্মের পর তাঁকে দেখাতে গেলে ছোট্ট আইনস্টাইনের 'পুতুলের চাবি কই?' বলে অবাক হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়া।কিংবা চাচার কাছ থেকে কম্পাস পেয়ে ছোট্ট আইনস্টাইনের মনে প্রশ্ন জাগা যে কেনো সেটি উত্তরদিকে মুখ করে থাকে অথবা সেই মেডিকেল ছাত্রটির কাছ থেকে পাওয়া জ্যামিতির বই যা আইনস্টাইন পরিণত বয়সে স্বীকার করেছিলেন তাঁর মনোজগতে বিরাট প্রভাব রাখার কথা। এসব ছাড়াও মুখস্তনির্ভর জার্মান শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পেরে নার্ভাস ব্রেকডাউনের কারণ দেখিয়ে বাবা মায়ের কাছে চলে আসা। এক বছর পর ডিপ্লোমা নিয়ে সুইস ইটিএইচে ভর্তি হয়ে একমাত্র ছাত্রী মিলেভা মারেকের সাথে অবৈধ সম্পর্কের ফসল হিসেবে প্রথম কন্যাসন্তানকে দত্তক দিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া। ইটিএইচ থেকে পাস করে পরবর্তীতে বন্ধুর সহায়তায় সুইস পেটেন্ট অফিসে চাকরি নিয়ে অবসর সময়গুলোতে আলোর দ্বৈত ধর্ম নিয়ে অত্যন্ত চিন্তাপ্রসূত বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলোকে জার্মান পত্রিকা 'এনালের ডি ফিজিক' এ ১৯০৫ সালে পাঠিয়ে বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্বের প্রকাশ করে পুরো বিশ্বব্যাপী হইচই ফেলে দেওয়া এবং বিপরীতভাবে এক অধ্যাপকের কাছ থেকে ঠিক এই তত্ত্বটির জন্যই গবেষণাপত্রটিকে 'দুর্বোধ্য' বলে তিরস্কার করা ইত্যাদি। এর পর পালাক্রমে সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের প্রকাশ, ফটো ইলেক্ট্রিক এফেক্ট, উদগীরণ তত্ত্ব,আলোর দ্বৈততা, মহাকর্ষ, ইউনিফায়েড থিউরি, বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যানসহ শেষ জীবনে গিয়ে আশ্চর্যরকমভাবে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বিরোধিতা করার উপায়ও বাতলে নেয়ার প্রচেষ্টা একজন পাঠকভাবে বিস্মিত করে কিংবা আশ্চর্যান্বিত করে 'ঈশ্বর পাশা খেলে' এ উক্তিটি। এর মধ্যেই মিলেভার সাথে ছাড়াছাড়ি, এলসার সাথে বিবাহ, চল্লিশ পরবর্তী জীবনে তেমন কোন ফলপ্রসূ কাজ করতে না পারার কথা, পটভূমিতে হিটলারের আগমন, জার্মানী ছেড়ে প্রথমে ইউরোপ এবং সর্বশেষ আমেরিকায় গমন এবং সর্বশেষে সবচেয়ে তাজ্জবকর ঘটনা - রুজভেল্টকে চিঠি লিখে পাঠানো 'পারমাণবিক বোমা তৈরির সর্নিবন্ধ অনুরোধ'! যেটিকে শেষ জীবনে তাঁর জীবনের সেরা অপরাধ বলে স্বীকার করে নেওয়া। লেখকের শেষ পাঞ্চলাইনটি ভালো লেগেছে। পৃথিবীর কালজয়ী বিজ্ঞানীর লিস্টে প্রথমেই যদি থাকেন নিউটন তবে দ্বিতীয় স্থানে স্বয়ং আইনস্টাইন এবং তাঁর তুলনা চলে আরেক দিকপাল রিচার্ড ফাইনম্যানের সাথে। সংক্ষিপ্ত ভাষায় আইনস্টাইনকে জানার জন্য এটি দারুণ সহকারী ও উপকারী একটি বই। লেখককে আন্তরিক ধন্যবাদ।
One of the grage book